ডেস্ক রিপোর্ট ::
মুসলিম অধ্যুষিত বাংলাদেশ সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় সেনা সমাবেশ করতে যাচ্ছে মিয়ানমার। রবিবার সীমান্তবর্তী এলাকায় এক হামলায় ৯ পুলিশসহ ১৪ জনের প্রাণহানির ঘটনায় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটি। মিয়ানমারের সরকারি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
মিয়ানমারের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ৯ পুলিশ সদস্য হত্যার সঙ্গে জড়িতদের ধরতে অনুসন্ধান চালানো হচ্ছে।
এদিকে বাংলাদেশের সঙ্গে সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় মিয়ানমারের সেনা সমাবেশের খবরে বাংলাদেশ উদ্বিগ্ন নয় বলে জানিয়েছেন বিজিবি’র মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এটা মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সমস্যা। হামলায় মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি)-এর সদস্যদের প্রাণহানির ঘটনায় তারা এ পদক্ষেপ নিয়েছে। এর সঙ্গে বাংলাদেশের কোনও সম্পর্ক নেই। তারপরও আমরা সতর্ক অবস্থায় রয়েছি।’
গত রবিবার ভোরে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডুতে বিজিপি’র তিনটি ছাউনিতে দুষ্কৃতিকারীদের হামলায় ওই প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। হামলাকারীরা বিজিপি’র ছাউনি থেকে অস্ত্রশস্ত্র ও বেশ কয়েকটি বন্দুক লুটে নেয়। বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় ওই হামলার পর টেকনাফে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে অতিরিক্ত সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি)।
কারা এই হামলা চালিয়েছে সেটি এখনও পরিষ্কার নয়। তবে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের এক কর্মকর্তা হামলার জন্যে বিচ্ছিন্নতাবাদী গ্রুপ রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও)-কে দায়ী করেছেন।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে বৌদ্ধদের সহিংসতায় বহু মানুষ নিহত হয়েছেন। বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে গেছেন হাজার হাজার রোহিঙ্গা। শত বছর ধরে দেশটিতে বসবাসরত এ মুসলিম সম্প্রদায়কে এমনকি নাগরিকত্বও প্রদান করেনি মিয়ানমার সরকার।
রবিবারের হামলার পর টেকনাফে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে অতিরিক্ত সতর্কতা নেওয়া হয়েছে। টেকনাফে বিজিবির কমান্ডিং অফিসার লেফট্যানেন্ট কর্নেল আবু জর আল জাহিদ জানান, রাতে গোলাগুলির শব্দ শোনার পর তারা দোভাষীর মাধ্যমে মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
বিজিবি কর্মকর্তারা জানান, মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী থেকে তাদের জানানো হয়েছে, তাদের কিছু আউটপোস্টে সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়েছে। ওই সন্ত্রাসীরা যাতে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে বিজিপি।
বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের দুর্গম এলাকায় অবস্থান করে আরএসও তাদের কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করে আসছে মিয়ানমার। এর আগে এ বছরের মে মাসে টেকনাফের একটি আনসার ক্যাম্পে হামলা চালিয়ে একজনকে হত্যা এবং ১১টি আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি লুটের ঘটনায়ও আরএসও জড়িত ছিল বলে জানিয়েছিল বাংলাদেশ পুলিশ।সুত্র, বাংলাটিব্রিউন
পাঠকের মতামত: